জনস্বাস্থ্যের কাজে ব্যাপৃত আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সংস্থাগুলি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা:(World Health organtion)
এপ্রিল, ১৯৪৫ এ সংযুক্ত রাষ্ট্রের সংঘের ( UNO) জন্মের সময় WHO অধীনস্থ একটি সংস্থা হিসেবে ভাবা হয়েছিল এবং ১৯৪৬ সালের আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য কনফারেন্স, নিউইয়র্কে, এই সংস্থার প্রকৃত রূপরেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। অবশেষে ৭ এপ্রিল, ১৯৪৮ সালের এই সংস্থার সংবিধান রচনা করা হয়। সেই থেকে প্রতিবছর ৭ই এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালন করা হয়ে থাকে। এবং নির্ধারিত কার্য-সূচি দ্বারা কাজের অগ্রগতির মূল্যায়ন করা হয়। এই সংস্থা পৃথিবীতে স্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রমের সবচেয়ে বড় সংস্থা। এর মূল কার্যালয় জেনিভা বা শহরে অবস্থিত।এই সংস্থা পৃথিবীর জনগণকে স্বাস্থ্য বিষয়ক ব্যাপক এবং সদর্থক সংজ্ঞা দিয়েছে
ইউনিসেফ (UNICEF):
এই সংস্থার পুরো নাম ইউনাইটেড নেশন ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন্স ইমারজেন্সি ফান্ড_
এই সংস্থা ( WHO) এর আগেই জন্ম লাভ করে। ১৯৪৬ সালে, প্রথমদিকে ইউরোপের যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশগুলি শিশুদের আপৎকালীন স্বাস্থ্য সংস্থার জন্যই এই সংস্থা নিজেকে ব্যাপৃত রাখে।
পরবর্তীকালে ইউনিসেফের কার্যাবলী উন্নতিশীল ও অনুন্নত দেশগুলিতে সম্প্রসারিত হয়। এই সংস্থার দক্ষিণ এশিয়ার মূল কার্যালয় দিল্লিতে অবস্থিত। এবং পৃথিবীর মূল কেন্দ্র নিউইয়র্কে অবস্থিত,UNICEF মা ও শিশুদের , স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও টিকাদানের কার্যসূচী অগ্রাধিকার দেয় এবং WHO এর ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে একযোগে প্রকল্প গুলির কাজ করে। এছাড়া বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাজ কেউ এই সংস্থা আর্থিক ও কারিগরি সাহায্য দেয়। এই সমস্ত প্রকল্পের সংযুক্ত রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যান্য সংস্থাগুলি হল যথা_ UNDP,FAO,UNESCO,UNCTAD ইত্যাদির ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় এই সংস্থা কাজ করে। মাতৃ মঙ্গল ও শিশু কল্যানের যাবতীয় কাজ ছাড়াও এই সংস্থা ও স্বাস্থ্যের অন্যান্য আঙ্গিক যথা, জল সরবাহ, স্কুল হেলথ এবং অন্যান্য সামাজিক কল্যাণমূলক কাজের ক্ষেত্রে কর্মকাণ্ড সম্প্রসারিত করেছে।
ইউ,এন,ডি,পি( UNDP):
ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম। এই সংস্থা ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশকে বিশেষ করে দরিদ্র ও অউন্নত দেশ-গুলিকে মানবসম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ ও উপযোগের জন্য আর্থিক কারিগরি সাহায্য দিয়ে থাকে।
ফাও( FAO):
ফুড এন্ড এগ্রিরিকালচার অর্গানাইজেশন। এটিও UNO – র একটি সহকারী সংস্থা। এই সংস্থার মূল কার্যালয় রোম শহরে। এই সংস্থা খাদ্যেৎপাদন, সংরক্ষণ, কৃষি ,খামার ,বনাঞ্চল রক্ষা ও সৃজন মৎস্য চাষ ইত্যাদি উন্নত করনের কাজে বিভিন্ন দেশকে সাহায্য করে। উদ্দেশ্য হল খাদ্য ও পুষ্টির দ্বারা জনগণের সামগ্রিক জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে এই সংস্থা সর্বোচ্চ পদে একজন বাঙালি প্রয়াত বিনয়রঞ্জন সেই উন্নতি হয়েছিলেন।
আই .এল. ও, ( ILO):
পুরো নাম ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন। এই সংস্থা সংযুক্ত রাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্বসূরী। প্রথম মহাযুদ্ধের পরে প্রতিষ্ঠিত অধুনালুপ্ত লীগ অফ নেশন এর সহযোগী সংস্থা হিসেবে ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সংঘটিত শ্রমিক ও জনগণের জন্য সামাজিক ন্যায়, জীবনযাত্রার মান উন্নত করণ, শ্রমের মর্যাদা ও উপযুক্ত পারিশ্রমিক এবং স্থায়ী শান্তির জন্য ক্রমাগত কাজে ব্যাপৃত আছে এই সংস্থার মূল কার্যালয় জেনিভাতে অবস্থিত।
বিশ্ব ব্যাংক (World Bank):
এটিও UNO এর একটি সংস্থা। এই সংস্থা অউন্নত ও উন্নতি -শীল দেশগুলির জন্য জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য সাহায্যকারী প্রকল্পের জন্য আর্থিক সাহায্য দেয়। বিশেষ করে বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট ও যোগাযোগ, কৃষি জল সরবরাহ , শিক্ষা, পরিবার কল্যাণ, স্যানিটেশন ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রকল্পগুলিকে অগ্রাধিকার দেয়।
ইউ.এস. এ. আই. ডি ( USAID):
ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট। এটি USA- র একটি সংস্থা, এই সংস্থা ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ নার্সিং এডুকেশন ,হেলথ এডুকেশন, স্যানেটারি প্রকল্প ইত্যাদিতে বিশেষ সাহায্যে দেয়।
টি.সি. এম( TCM):
টেকনিকাল কো-অপারেশন মিশন। এটি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংস্থা। USAID – এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় কাজ করে। কাজের ক্ষেত্রে এটি UDAID – এর পরিপূরক এবং প্রায় একই ধরনের কাজ করে।
ব্লক জেলার ফাউন্ডেশন:
USA – র একটি বেসরকারি সংগঠন। ১৯১৩ সালে জন, ডি, রকফেলার নামে আমেরিকান ধনকুবের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এই সংস্থার অবদান উল্লেখযোগ্য। কলকাতার অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন ও পাবলিক হেল্থ তার সহযোগী সংগঠন গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং শহর স্বাস্থ্য কেন্দ্র যথাক্রমে সিঙ্গুর (হুগলি জেলা) ও চেতলায় অবস্থিত এশিয়ার মধ্যে প্রথম জনস্বাস্থ্য রক ফেলার ফাউন্ডেশন এর আর্থিক সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ফোর্ড ফাউন্ডেশন ( Ford Foundation):
এটি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি একটি সংস্থা। আমেরিকার মোটর গাড়ি ব্যবসায়ী ধনকুবের হেনরি ফোর্ড দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। এই সংস্থার অবদান বিশেষ উল্লেখ ক্ষেত্রে দাবি রাখে। পূর্ণমালী( তামিলনাড়ু) নজফ গড়( হরিয়ানা) ইত্যাদি স্থানে স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও জনস্বাস্থ্য গবেষণায় এই সংস্থা বিশেষ সাহায্য করে। গান্ধীগ্রামে(তামিলনাড়ু) গ্রামীণ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় এই সংস্থার অনুকূল্য প্রতিষ্ঠিত। পরিবার কল্যাণ প্রকল্প এদের অবদান সুবিদিত।
কেয়ার(CARE):
পুরো নাম, কোঅপারেটিভ ফর অ্যামেরিকান এভরি হোয়্যার , এটি একটি আমেরিকান বেসরকারি সমাজ কল্যাণমূলক সংস্থা। আমাদের দেশের স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামের বেশিরভাগ এদেরই বদান্যতায়।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রশ ( International Red cross):
সারা পৃথিবীতে এই সংস্থা খুবই পরিচিত। এটি একটি অরাজনৈতিক মানবিক প্রতিষ্ঠান। হেনরি ডোনাল্ড নামে একজন সুইস নাগরিক ইতালির সলফিনিনের যুদ্ধে যুদ্ধরত জৈনদের দুঃখ দুর্দশা দেখে ১৮৬৪ সালে যে জেনিভাতে প্রথম কনভেশন ডাকেন। তারপর থেকেই এই সংস্থা যুদ্ধবিগ্রহ উভয় পক্ষে হতাহতদের চিকিৎসা, শুশ্রূষা, খাদ্য বিতরণ, বন্দী বিনিময় এমনকি সত্যি পক্ষে শিবিরের বন্দী সৈন্যদের খবরা-খবর ও চিঠিপত্র আদান-প্রদান ইত্যাদি কাজ করে আসছে। পরবর্তী স্তরে এই সংস্থা আপমর জনসাধারণের জন্য চিকিৎসা, স্বাস্থ্য পুষ্টি প্রাকৃতিক বিপর্যয়, ইত্যাদি ক্ষেত্রে কর্মকাণ্ড সম্প্রসারিত করেছে। পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশেই এই সংস্থার অস্তিত্ব রয়েছে_ জাতীয় রেডক্রস সংস্থা গুলোর মাধ্যমে রেড কোষের প্রত্যেকটি ক্রমের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিষয়ক সাধারণ প্রতি কে পরিণত করেছে।
For More Info Stay with Us. Thank You
Website: educenters.in
Discover more from educenters.in
Subscribe to get the latest posts sent to your email.
You must be logged in to post a comment.