W.B.C.S মেইন পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য
ভারতের জাতীয় আন্দোলন
ভারতের ইতিহাসে আধুনিক যুগ:
বিভিন্ন পর্যটকদের বিবরণ ও অন্যান্য সূত্র থেকে ভারতের অপরিসীম ঐশ্বর্যের কথা জানতে পেরে বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশগুলি ভারতের পৌঁছানোর সামুদ্রিক পথের খোঁজ করতে থাকে। এই ব্যাপারে পথিকৃৎ ছিল পর্তুগীজরা।1948 সালে পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-দা-গামা কালিকট বর্তমানে কোঝি কোডে পৌঁছানোর সামুদ্রিক পথ আবিষ্কার করেন। তার এই আবিষ্কার পর্তুগীজদের, অন্যান্য ইউরোপীয় জাতিদের মধ্যে প্রথম বলে প্রতিপন্ন করে ভারতের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন ও উপকূলবর্তী স্থানগুলি নিজস্ব ঘাঁটি গড়ার ক্ষেত্রে। এরপর একে একে ডাচ, ইংরেজ, ডেন, এবং ফরাসিদের আগমন ঘটে। বস্তুত: এদের মধ্যে কেবল ইংরেজ ফরাসীরাই ভারতের ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে যায়। তবে কেবলমাত্র বাণিজ্যিই তাদের লক্ষ্য থাকে না। ধীরে ধীরে ক্ষমতার লোভে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাদের প্রবেশ ঘটে। অত: পর মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পর যে রাজনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়, সেই অবস্থা এই দুই জাতির ক্ষমতার দখলের ইচ্ছাকে বহুলাংশে অনুঘটকের কাজ করে।
ইউরোপীয়দের আগমন:
শেক্সপিয়ার ভারতকে ” ল্যান্ড অফ গ্রেড অপরচুনিটিস” আখ্যা দিয়েছেন। আবার হেগেলের ভাষায় ভারত হল_ Land of Desires। বিগত পঞ্চদশ শতাব্দী পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক কেবলমাত্র তিনটি পথ ছিল, যেগুলি সবকটিই সামুদ্রিক পথ_
(ক) প্রথমটি হল, মধ্যশিয়ার মধ্যে ক্যাস্পিয়ান ও ব্ল্যাক সি’ হয়ে।
(খ) দ্বিতীয় টি হল, সিরিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগরের মধ্য দিয়ে।
(গ) তৃতীয়টি, রেড সি-এর মধ্য দিয়ে মিশর হয়ে। কিন্তু 1453 সালে কন্সট্যান্টিননোপলের যুদ্ধের পর তুর্কিরা সবকটি রাস্তায় বন্ধ করে দেয়।
পর্তুগিজ:
•ভাস্কো-দা-গামা 1948 সালের 20শে মে কালিকট বন্দরে পৌঁছন এবং কালিকট বন্দরে তৎকালীন রাজা জামোরিন তাকে অভ্যর্থনা জানান।
• কালিকট, কোচিন ক্যান্নানোরে বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে ওঠে।
• উত্তমাশা অন্তরীপ হয়ে আবিষ্কৃত এই নতুন সমুদ্র পথ কলম্বাস কর্তৃক আমেরিকার খোঁজ- এই দুই ঘটনায় অন্যতম শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার বলে আখ্যায়িত করেছেন অ্যাডাম স্মিথ।
• ভারতে পড়তে পর্তুগীজদের প্রথম রাজধানী ছিল কোচিন(1502) যা পরবর্তীকালে গোয়াতে স্থানান্তরিত হয়।
• ভারতের নিযুক্ত প্রথম পর্তুগীজ গভর্নর ছিলেন- ফ্রান্সিসকো ডে আলমিডা (1505-09) যিনি ‘ ব্লু ওয়াটার পলিসি’ চালু করেছিলেন।
• 1509 সালে আলফানসো ডি আলবুকাক ভারতের ‘পর্তুগীজ গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি বিজাপুরের হাত থেকে গোয়া দখল করেন (1510 সালে) এবং ‘দ্য পলিসি অফ ইম্পেরিয়ালিসম’ এর সূচনা করেন।
• ভারতের পর্তুগিজদের সর্বশ্রেষ্ঠ সামুদ্রিক শক্তিতে পরিণত করে 1515 সালে আলবুকাক প্রয়াত হন।
• 1530 সালে নিনো – ডা কুণহার আমলে পর্তুগীজদের রাজধানী কোচিন থেকে গোয়াতে স্থানান্তরিত হয়। তিনি তৎকালীন গুজরাতের শাসনকর্তা বাহাদুর শাহ এর কাছ থেকে 1534 সালে ‘ দিউ এবং বেসিন ‘অধিগ্রহণ করেন। কিন্তু 1631 সালে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের অনুগত কাসিম খানের নিকট পরাজিত হয়ে পর্তুগীজরা হুগলী পরিত্যাগ করেন।
• পর্তুগীজরা 1559 সালে দমন অধিগ্রহণ করে।
• ষষ্ঠদশ শতকে অন্তিমলগ্নে পর্তুগিজদের ক্ষমতা ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকে।
• 1661 সালে। , ইংল্যান্ড দ্বিতীয় চার্লসের সাথে পর্তুগালের রাজার বোন ক্যাথরিনের বিবাহ সময় ‘বোম্বাই ‘ কে রাজকীয় উপহার হিসাবে প্রদান করা হয়।
• পর্তুগিজরা এরপর আর সেরকম ভাবে ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, এর পিছনে যে কারণগুলি ছিল তার অন্যতম হল_ ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও বোম্বেটে গিরি।
• পর্তুগিজরা ভারতীয়দের তামাক চাষ শিখিয়েছিলেন।
• হুম ভারতের প্রথম পর্তুগিজ কারখানা স্থাপিত হয় কালিকটে।
• প্রখ্যাত সন্ত ফ্রান্সিস জেভিয়ার ভারতে আসেন মার্টিন আঙ্খ লাফানসো ডিজুজার (1542-45) সাথে।
• ধীরে ধীরে প্রায় সমস্ত পর্তুগিজ অধিগৃহীত অঞ্চল গুলি মারাঠা ( সলসেট এবং বেসিন, 1739) ইংরেজ ও ডাচদের অধীনে চলে যায় কেবলমাত্র গোয়া ,দমন ও দিউ 1961 সালে অবধি পর্তুগিজদের অধীনে ছিল।
Discover more from educenters.in
Subscribe to get the latest posts sent to your email.